রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:০২ অপরাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধি:
ঝালকাঠির নলছিটিতে আ. সত্তার জোমাদ্দার এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় দায়ের পর তিনদিনেও কোন আসামি গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। উল্টো আসামিদের হুমকিতে আতঙ্কিত হয়ে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যরা ঘর থেকে বের হতে পারছে না অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ২৭ এপ্রিল বীর মুক্তিযোদ্ধা সত্তার জোমাদ্দার বাদি হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে নলছিটি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন, উপজেলার নলবুনিয়া গ্রামের মৃত আলী আজীম খানের ছেলে মো. ফারুক আহম্মেদ, হেমায়েত উদ্দিন খানের ছেলে বর্তমান ইউপি সদস্য (মেম্বার) রেজাউল করিম সোহাগ, মাে. ফারুক আহম্মেদের ছেলে আতিকুর রহমান, মৃত আ. রহিম খানের ছেলে মাে. হেমায়েত উদ্দিন খান, ফরিদ উদ্দিন খান ছেলে মো. আসিফ খান, মৃত সুলতান খানের ছেলে মো. গোলাম মোস্তফাসহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন।
মামলা বিবরণে জানা গেছে, উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বীর মুক্তিযোদ্ধা সত্তার জোমাদ্দারের ছেলে আবুল কালাম আজাদ (রনি) ৮ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য (মেম্বার) প্রার্থী হওয়ায় অপর মেম্বার প্রার্থী (বর্তমান মেম্বার) রেজাউল করিম সোহাগসহ অন্যান্য আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়। গত ২৩ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে স্থানীয় নলবুনিয়া বাজার থেকে ফেরার পথে আসামিরা লোহার রড, লাঠিসোটা ও দেশিয় অস্ত্র নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার পথরোধ করে। এসময় তার ছেলে রনিকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে নিতে বলেন এবং মুক্তিযোদ্ধাকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল দিতে থাকে ওই আসামিরা। তিনি এর প্রতিবাদ করলে আসামিরা তাকে মারধর শুরু করে। আসামি ফারুক খান, সোহাগ খান ও আতিকুর রহমান লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মুক্তিযোদ্ধাকে পেটাতে থাকেন। মারধরের একপর্যায় বীর মুক্তিযোদ্ধা সত্তার জোমাদ্দার রাস্তার ওপর পড়ে গেলে মেম্বার রেজাউল করিম সোহাগ তার পাঞ্জাবির পকেটে থাকা ৬৫০ টাকা নিয়ে যায়। আহত মুক্তিযোদ্ধার ডাকচিৎকারে আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলের দিকে এগিয়ে আসলে আসামিরা তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের খুন-জখমের হুমকি দিয়ে সটকে পড়েন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সত্তার জোমাদ্দার শুক্রবার দুপুরে নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ অবস্থায় মুঠোফোনে সাংবাদিকদের বলেন, আসামিরা মামলা দায়ের পর বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। তারা দেশিয় অস্ত্র নিয়ে স্থানীয় নলবুনিয়া বাজারে মহড়া দিচ্ছে। আমার ছেলে নির্বাচনী কর্মীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘মামলার ২ নম্বর আসামি রেজাউল করিম সোহাগ প্রতিনিয়ত আমার ছেলেকে নির্বাচন থেকে সরে যেতে হুমকি দিচ্ছে। আমার পরিবারের সদস্যরা সোহাগের ভয়ে ঘর থেকে বের হতে পারছে। এই বৃদ্ধ বয়সে এসে এমন ঘটনা ঘটবে, তা কল্পনাও করিনি।’
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজি চালের কার্ড বিতরণে অনিয়ম পাওয়ায় মেম্বার রেজাউল করিম সোহাগ খানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছিল নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুম্পা সিকদার।
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলি আহম্মেদ বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।